শিরোনাম:
আমির হোসেন জনিঃ ৬ ডিসেম্বর ফেনীর ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালে এই দিনে ফেনী মায়ের দামাল ছেলেরা পাক হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে ফেনীকে শত্রু মুক্ত করে। সে থেকে ৬ ডিসেম্বর ফেনীবাসীর কাছে বিশেষ স্মরণীয় দিন ও ফেনী মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে । প্রতি বছর দিবসটি ফেনীবাসী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে। এবার দিবসটিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। দিবসটিতে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে তালাবদ্ধ থাকা ফেনী প্রেস ক্লাবকে খুলে দেয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর ক্লাবটিকে সীলগালা করে দেয় জেলা প্রশাসন। ক্লাবের দুই পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের কারণে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসন তখন এ সীদ্ধান্ত নিয়েছিলো। সে থেকে দীর্ঘ ৬ বছর একটানা তালাবদ্ধ ছিলো ফেনীর সাংবাদিকদের প্রাণের সংগঠন ঐতিহ্যবাহী ফেনী প্রেস ক্লাব ।
ফেনীতে ইতিবাচক সাংবাদিকতার ধারা প্রবাহিত ও টিকিয়ে রাখার স্বার্থে মূল স্রোতধারার সাংবাদিকদের ঐক্য ও প্রেসক্লাবের তালা খোলার বিকল্প ছিলোনা। বিষয়টি অনুধাবন করে নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়তে প্রচেষ্টা চালায় উভয় পক্ষের সিনিয়র সাংবাদিকরা। গত কয়েকদিন ধরে চলে উভয়পক্ষের আলোচনা। ব্যাপক আলোচনা ও একাধিকবার বসার পর অবশেষে ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসানের আন্তরিকতায় ঐক্যে পৌঁছায় তারা। ফেনী প্রেস ক্লাবের বিবাদমান ৪টি গ্রুপ নিজেদের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নিজেদের ভেদাভেদ ভুলে গত ৬ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে তালা খুলে প্রেস ক্লাবে প্রবেশ করে। পরে সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ ফেনী প্রেসক্লাবের ব্যানারে ফেনী মুক্ত দিবসে শহরের জেল রোড়স্থ শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং প্রেসক্লাবের ঐক্যের ব্যাপারে শপথ বাক্য পাঠ করেন।
সাংবাদিকরা জানান, পেশাদার সাংবাদিকদের প্রাণের এ জায়গাটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছিল প্রকৃত সাংবাদিকতা। সাংবাদিকদের মধ্যে বাড়ছিলো অনৈক্য। বিবাদমান এ অচলাবস্থা দূর করে ফেনীর সাংবাদিকরা এক হয়েছে ঐক্যের প্রশ্নে। যার ধারাবাহিকতায় ক্লাবে প্রবেশ করেছে সাংবাদিকরা। এখানে প্রতিটি টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি, প্রথম কাতারের জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধি, ফেনী থেকে প্রকাশিত সকল দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদ ও নির্বাহী সম্পাদকরা থাকবেন।
প্রেসক্লাবে সাংবাদিকরা ফেরায় ফেনী সাংবাদিকতা নতুন করে প্রাণ সঞ্চার করবে। পেশাগত সাংবাদিকদের অনৈক্যের কারণে দীর্ঘদিন জেলার সর্বত্র অপেশাদাররা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। এখন থেকে সে অবস্থার অবসান ঘটবে বলে ফেনীবাসী আশা করে।